ভারত ও ব্রিটেনের জন্য খুলল জার্মানির দরজা
করোনা ভাইরাসের ছোঁয়াচে ডেল্টা সংস্করণ নিয়ে দুশ্চিন্তা সত্ত্বেও জার্মানি কিছু দেশ থেকে যাত্রীদের আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলো৷ ব্রিটেন, ভারত, নেপাল, রাশিয়া ও পর্তুগালে ডেল্টার প্রকোপ কিছুটা কমায় জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ তালিকা থেকে এই দেশগুলির নাম সরিয়ে নিয়েছে৷ বুধবার থেকে এই পাঁচটি দেশকে ‘ভাইরাস ভেরিয়েন্ট কান্ট্রিস’ থেকে ‘হাই ইনসিডেন্স এরিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে৷ ফলে জার্মান নাগরিক ও জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশি ছাড়া এই সব দেশের বাকি মানুষও জার্মানিতে প্রবেশ করতে পারবেন৷ তবে তাদের কোয়ারেন্টাইন ও করোনা পরীক্ষার নিয়ম পালন করতে হবে৷ অর্থাৎ জার্মানিতে দশ দিনের কোয়ারেন্টাইন চলাকালীন পাঁচ দিনের মাথায় করোনা পরীক্ষায় ফলাফল নেতিবাচক হলে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হবে৷ তাছাড়া অনুমোদিত টিকার সব ডোজ নেওয়া থাকলে এই নিয়ম থেকে রেহাই পাওয়া যাবে৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান গত সপ্তাহেই এমন পূর্বাভাষ দিয়েছিলেন৷ যাবতীয় বিধিনিয়ম সত্ত্বেও জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ডেল্টার অনুপাত বেড়ে চলায় আলাদা করে কিছু দেশ থেকে মানুষের আগমন নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন স্পান৷ ডেল্টা ভেরিয়েন্ট মোকাবিলা করতে করোনা টিকা যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে বলেও তিনি কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেন৷ ম্যার্কেল বলেন, অদূর ভবিষ্যতে করোনা টিকার সব ডোজ পাওয়া মানুষ কোয়ারেন্টাইনের ভয় ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন বলে তিনি মনে করছেন৷ ডেল্টার অনুপাত বেড়ে চললেও জার্মানিতে সার্বিক করোনা সংক্রমণের হার এখনো কমে চলেছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে গড় সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার এখন পাঁচেরও কম৷ তবে এমন সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান আরও বেশি মানুষকে দ্রুত টিকা দেবার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-র সূত্র অনুযায়ী, সোমবার সিডিইউ দলের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ম্যার্কেল কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন৷ তার মতে, একমাত্র এভাবেই করোনা ভাইরাসের ডেল্টা সংস্করণের মোকাবিলা করা সম্ভব৷ উল্লেখ্য, রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের হিসেব অনুযায়ী, জনসংখ্যার মধ্যে ১২ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের মধ্যে কমপক্ষে ৮৫ শতাংশ করোনা টিকার সব ডোজ পেলে ডেল্টা সংস্করণের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে৷ সেইসঙ্গে যাট বছরের বেশি বয়সি মানুষের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ শতাংশকে টিকা দিতে হবে৷ ঠিক সময়ে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলে সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ সম্ভবত প্রতিহত করা যাবে৷